
শহর জুড়ে অ্যাক্সিডেন্টের মাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। প্রসাশনও নড়েচড়ে বসেছে সে বিষয়ে। একের পর এক নিয়মও তৈরি হচ্ছে। একটি সমীক্ষা বলছে শহরে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বেশিরভাগই বাইক-অ্যাক্সিডেন্ট। তাই অনেক কড়া হয়েছে ট্রাফিক আইন। হেলমেট ব্যবহার নিয়েও অনেক সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। অনেক কঠিন করা হয়েছে বিনা হেলমেটের যাত্রীদের ফাইন এবং নিয়মকানুন। জরিমানার টাকাও ব্যাঙ্ক মারফত জমা হবে এমন নিয়ম অনেকক্ষেত্রেই। তবুও বারবার অনেক জায়গাতেই ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ট্রাফিকের ভুমিকা নিয়েও বিতর্ক উঠছে অনেক ক্ষেত্রেই। ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’ কতটা কার্যকরী হচ্ছে? হেলমেট নিয়ে এত সতর্কতা তবু কি বাড়ছে হেলমেটের ব্যবহার? এই নিয়েই আজকের বিতর্ক-
রশ্মিতা দাস (ট্রাফিক পুলিশ-কর্মী): আগের থেকে অনেক বেড়েছে বাইক চালকদের হেলমেটের ব্যাবহার। এমনকি রুল-ব্রেক ব্যাপারটাও অনেক কমেছে। আর ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’ অনেকটাই কার্যকরী হয়েছে। রাস্তায় রোজ নিজে ডিউটি করে, নিজে চোখে দেখে অন্তত আমার তাই মনে হয়।
বিশ্বজিৎ পাল (চাকুরিজীবী): আমাদের রোজ রাস্তাতেই দিনের অনেকটা সময় কাটে। বাইক রাইডারদের প্রসঙ্গে শুধু নয় এ ব্যাপারে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে আইন করে কিছু করা সম্ভব নয়, যদি না মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন আসে। মানুষের নিজে থেকে সচেতন হওয়াটা আগে দরকার। এবার আসি হেলমেটের প্রসঙ্গে, সরকার তার মত করে অনেক আইন আনছে তার প্রয়োগও হচ্ছে; তবে যথাযথ কিনা সেটা কিন্তু অনেকটাই প্রশ্নচিনহের মুখোমুখি। অনেক পেট্রোল পাম্পের মুখেই দেখি ১০ টাকায় হেলমেট পাওয়া যায় কারন হেলমেট ছাড়া পাম্প তেল দেবে না। এটা বড় হাস্যকর ব্যাপার নয় কি?
শুভঙ্কর সরখেল (প্রাক্তন-অধ্যাপক): আমি নিজেই নিজের গাড়ি ড্রাইভ করি মাঝেমাঝে। রাস্তাঘাটে অনেক জিনিসই চোখে পড়ে যা সত্যিই খুব দৃষ্টিকটু। বাইকের সংখ্যা তো শহরে মুড়ি-মুড়কির মত বাড়ছে। আর হেলমেটের প্রসঙ্গে আর কী বলবো! সত্যি বলতে কি এটা খুবই লজ্জার ব্যাপার শুধু হেলমেট কেন, যেকোনো রুল ব্রেক করলেই ২০০ টাকার ফাইন বিল ছাড়া ৪০-৫০ টাকাতেও রফা হয়ে যায়। শুধু শুধু হেলমেট নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ কী! নতুন আইন করে কিছু লোক শুধরে গেলেও এখনও একটা বড় অংশের বাইক-আরোহীর কাছে এটা ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মনোভাব ছাড়া কিছু নয় বলেই আমার মনে হয়।
নিরঞ্জন দেবরায় (সমাজ-কর্মী): এটা নিয়ে তো অনেক রকম সচেতনতামূলক প্রচার হচ্ছে সরকারী-বেসরকারি দু’রকম ভাবেই। একটা কথা তো অস্বীকার করা জায়গা নেই যে নিজের ভালো কেউ না বুঝলে সরকার বা প্রাশাসন কী করবে!