
বলিউডের অভিনেত্রী সেলিনা জেটলির কথা নিশ্চই সকলের মনে আছে। এক নম্বর নায়িকার জায়গা কোনওদিনও দখল করতে না পারলেও ভক্তকূলের রাতের ঘুম এক নিমেষে কেড়ে নিতে পারতেন তিনি। সেলিনার চোখের চাহনি আর তার একরাশ ঘন চুলের আবেদনের টিআরপি কিছু কম ছিল না বক্স অফিসে। তবে হঠাতই বিয়ে করে নিজেকে রুপোলী পর্দার জগত থেকে অনেকটাই সরিয়ে নেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর পর ফের রুপোলী পর্দা কাঁপাতে আসছেন সেলিনা। ‘আ ট্রিবিউট টু ঋতুপর্ণ ঘোষ’-এ নায়িকার চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। সম্প্রতি পাশ হওয়া ৩৭৭ ধারার উপর ভিত্তি করে নির্মিত সিনেমা -এ নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি।
সিনেমাটির মূল বিষয়বস্তু এলজিবিটিকিউআইএ (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুয়ের অর কোয়েশ্চনিং অ্যান্ড ইন্টারসেক্স) আন্দোলন। মা-মেয়ের সম্পর্কের গল্প নিয়ে নির্মিত হবে ছবি। মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করবেন সেলিনা। মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে লিলেতে দুবেকে। কেন্দ্রীয় পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করবেন আজহার খান।
প্রথমে কথা ছিল, সিনেমাটিতে মেয়ের চরিত্রের জন্য অভিনয় করবেন পাওলি দাম। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি না হওয়ায়, সেলিনাকে দেখা যাবে সেই চরিত্রে। নিজে দীর্ঘ দিন ধরে এলজিবিটি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। সেই হিসেবে তিনি এই চরিত্রে বেশ সফল হবেন বলেই মনে করছেন ছবির পরিচালক রামকমল মুখার্জী।
কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেই তিনি তাঁর জীবনের একটি চরম সত্য তুলে ধরলেন সকলের সামনে। এক সময়ে সেলিনা নাকি এক সমকামী পুরুষের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে সেই সম্পর্ক নাকি খুব সুখের হয়নি।
সেলিনা জানান, কেরিয়ারের একেবারে গোড়ার দিকে তিনি যখন অভিনয় জগতে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়ছিলেন, তখন কলকাতার এক জন মেকআপ শিল্পীর প্রতি তাঁর প্রবল সম্মানবোধ ছিল। ওই শিল্পী এক জন সমকামী পুরুষ ছিলেন। তাঁর লড়াইটা মুগ্ধ করেছিল সেলিনাকে। সেলিনা জানান, এক জন সমকামী, মধ্যবয়স্ক পুরুষ কেমন করে সফল ভাবে বাঁচেন, তা তিনি শিখতেন রোজ। ঘটনাচক্রে সেই একই সময়ে অন্য এক জন সমকামী পুরুষ, যিনি নিজেকে সমকামী পরিচিতি দিতেন না, তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেলিনা। এবং সেই অভিজ্ঞতা খুব খারাপ ছিল।
সে যা-ই হোক, এখন নিজের কেরিয়ার নিয়ে বেশ খুশি সেলিনা। মাঝে দীর্ঘ সময় পর্দায় কাজ না করলেও, জন্ম দিয়েছেন চার-চারটি যমজ সন্তানের। এক সন্তান মারাও গিয়েছেন তাদের মধ্যে। শেষমেশ, দীর্ঘ বিরতির পরে ফের কাজ শুরু। সেলিনার কথায়, লেখা, গান, সংসার নিয়ে ভালোই দিন কাটছিল। কিন্তু নিজের কাজের প্রতি একটা ভালোবাসা থেকেই যায়। ১৫ বছর বয়স থেকে টানা কাজ করছি, তাই একটু বিরতি নিয়েছিলাম মাত্র।